- প্রকাশিত : ২০২৫-১০-১১
- ২০ বার পঠিত
ফেনী ব্যুরো ;
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার উত্তর নিলক্ষী এলাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত ফুলগাজী-রাজেশপুর সড়কের উত্তর নিলক্ষীর বাইতুল আমান জামে মসজিদের পূর্ব পাশের ব্রিজটির পশ্চিম অংশ ২০২৪ সালের বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দীর্ঘদিন মেরামতের অভাবে ব্রিজটি এখন বিপজ্জনক অবস্থায় পৌঁছেছে।
এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। বিশেষ করে নিলক্ষী, গাবতলা, মনতলা, মান্দারপুর, সোনাপুর ও রাজেশপুর এলাকার সাধারণ মানুষ এবং শিক্ষার্থীদের চলাচলের একমাত্র প্রধান পথ এটি। বর্তমানে ব্রিজটি এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে ভারী যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা, হালকা যানবাহন এমনকি পথচারীরাও ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন।
নিলক্ষী গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে এ ভাঙা রাস্তা দিয়ে পারাপার হচ্ছি। আমাদের ছেলে-মেয়েরা প্রতিদিন এই রাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে স্কুল-কলেজে যায়। নিলক্ষী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নিলক্ষী অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ উচ্চ বিদ্যালয়, ফুলগাজী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ফুলগাজী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, দক্ষিণ শ্রীপুর ইস্কান্দারিয়া সুন্নিয়া আলিম মাদ্রাসা ও ফুলগাজী দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা এই সড়কেই চলাফেরা করে।”
স্থানীয় বাসিন্দা মো. সুমন বলেন, “আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের কাছে বহুবার গিয়েছি। সবাই শুধু আশ্বাস দিয়েছে, কিন্তু এখনো কোনো সমাধান হয়নি। পরে আমরা সংবাদকর্মীদের সহযোগিতা চেয়েছি।”
সিএনজি চালক মো. আবদুল করিম জানান, “এই ব্রিজ দিয়ে গাড়ি চালানো মানে মৃত্যুর ঝুঁকি নেওয়া। অনেকবার গাড়ির চাকা ভেঙে গেছে, যাত্রী নামিয়ে দিতে হয় মাঝ পথে। তবুও মানুষকে নিতে হয়—কারণ বিকল্প রাস্তা নেই।”
অন্যদিকে নিলক্ষী অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোঃ হাসান বলেন, “আমরা প্রতিদিন এই ব্রিজ দিয়ে যাই। লোহার রড বের হয়ে আছে, ঢালাই ভেঙে পড়েছে। ভয় লাগে, তবুও যেতে হয় স্কুলে। বন্ধুরা বলে—‘আজ হয়তো ব্রিজটা পড়বে!’।”
ব্রিজের বিপজ্জনক অবস্থার কারণে এলাকায় এখন ছোট যানবাহন ছাড়া বড় কোনো যান চলাচল করতে পারছে না। এতে পণ্য পরিবহন ও জরুরি সেবা ব্যাহত হচ্ছে, ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে ফুলগাজী উপজেলা প্রকৌশলী আসিফ মোহাম্মদ জানান, “রাস্তাটি ও ব্রিজের একপাশ দেবে গেছে। আমরা ইতিমধ্যে মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। আশা করছি, দ্রুত কাজ শুরু হবে। তবে তার আগেই কোনো জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া যায় কিনা, তা আমরা বিবেচনা করছি।”
স্থানীয়দের দাবি, জরুরি ভিত্তিতে ব্রিজটির সংস্কার কাজ শুরু হলে এলাকাবাসী যেমন উপকৃত হবেন, তেমনি কোনো বড় ধরনের দুর্ঘটনার আগেই রক্ষা পাওয়া যাবে।
নিউজটি শেয়ার করুন
এ জাতীয় আরো খবর..